পাকিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। দেশটির খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানে পৃথক অভিযানের সময় হওয়া সংঘর্ষে কমপক্ষে ১২ ‘ভারতীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে সংঘর্ষে চারজন সেনা সদস্যও নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৩০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে চালানো পৃথক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে অন্তত ১২ জন ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে এবং এ সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন লেফটেন্যান্টসহ চারজন সেনাসদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জাজানিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর।
গত ২৮ মে বেলুচিস্তানের লোরালাই জেলায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। ওই গোয়েন্দা তথ্যে দাবি করা হয়, সেখানে “ফিতনা আল হিন্দুস্তান” নামের ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের অবস্থান ছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, “সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের অবস্থানে সফলভাবে আঘাত হানে এবং তীব্র গোলাগুলির পর চারজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়।”
এ সময় সেখান থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। এই সন্ত্রাসীরা এর আগে ২০২৪ সালের ২৬ আগস্ট ও ২০২৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ন্যাশনাল হাইওয়ে-৭০তে ভয়াবহ হামলায় জড়িত ছিল, যেখানে ৩০ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হয়েছিলেন বলে আইএসপিআরের দাবি।
এছাড়া বেলুচিস্তানের কেচ জেলায় আরেকটি অভিযানে আরও একজন ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, “ফিতনা আল খোয়ারিজ” গোষ্ঠীর সাতজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে দুটি আলাদা অভিযানে। ২৮ ও ২৯ মে রাতের মধ্যে উত্তর ওয়াজিরিস্তানের শাওয়াল এলাকায় একটি চেকপোস্টে সন্ত্রাসীরা হামলার চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী তা প্রতিহত করে। এতে ছয়জন সন্ত্রাসী নিহত হয়।
তবে তীব্র সংঘর্ষে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট দানিয়াল ইসমাইল (২৪) সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় নিহত হন। তার সঙ্গে নিহত হন আরও তিন সেনাসদস্য। তারা হলেন- নায়েব সুবেদার কাশিফ রেজা (৪১), ল্যান্স নায়েক ফিয়াকত আলি (৩৫), সৈনিক মোহাম্মদ হামিদ (২৬)।
এছাড়া চিত্রাল জেলাতেও আরেক অভিযানে একজন ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
আইএসপিআর বলেছে, “এই ধরনের আত্মত্যাগ আমাদের সংকল্প আরও দৃঢ় করে তোলে। পাকিস্তান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে এবং এসব হামলার নেপথ্যের কারিগর ও মদতদাতাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।”
মূলত ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর পাকিস্তানে বিশেষ করে সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বাড়তে থাকে। তবে ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে বলে জানানো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম